জেনারেল ক্যাডারসমূহের সুবিধা অসুবিধা BCS PREPARATION | BCS CADRE CHOICE

জেনারেল ক্যাডারসমূহের সুবিধা অসুবিধা BCS PREPARATION


BCS PREPARATION | BCS CADRE CHOICE
BCS PREPARATION | BCS CADRE CHOICE


ইতোমধ্যেই আপনারা জেনেছেন বিসিএস পরীক্ষার আবেদন করার সময় ক্যাডার পছন্দক্রম দেওয়া লাগে। যেহেতু সবার চাহিদা, ইচ্ছা, রুচিবোধ, লাইফস্ট্যাইল আলাদা আলাদা, তাই পছন্দক্রমও আলাদা হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই আমি জেনারেল ক্যাডারসমূহের পদায়ন, পদোন্নতি, নিয়মিত স্যালারির বাইরে বৈধ আর্থিক সুবিধা, সমস্যা নিয়ে সংক্ষেপে আলোকপাত করলাম যাতে পছন্দক্রম দিতে কিছুটা হলেও দ্বিধাদ্বন্দ্ব কম কাজ করে আপনাদের।

===পররাষ্ট্র ক্যাডার===
বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের চাকরি হলে আপনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সহকারী সচিব হিসেবে যোগদান করবেন। প্রথম অবস্থায় কাজের চাপ অনেক বেশি পাবেন। টাইপিং থেকে শুরু করে সংসদ অধিবেশন চলাকালীন পার্লামেন্টে ডিউটি করতে হতে পারে। আর গাড়ী সার্ভিস বলতে বাসায় যাওয়া আসা করার জন্য মাইক্রোবাস সার্ভিস পাবেন। বিভাগীয় ট্রেনিং হয় ঢাকার বেইলী রোডে।
চাকরি স্থায়ী হলে আপনাকে দূতাবাসে পদায়নের জন্য বিবেচনা করা হবে। সেখানে থার্ড সেক্রেটারী হিসেবে যোগ দেবেন। ছয় বছর দুই দেশে কাজ করার পর তিন বছরের জন্য ঢাকায় পোস্টিং পাবেন। এভাবে চক্রাকারে চলতেই থাকবে।
দূতাবাসে পদায়ন হলে দেশের নিয়মিত স্যালারীর বাইরে ফরেন ভাতা (মাসে ১২০০ ডলার), বাসা ভাড়া (বছরে ২০০০০ ডলার), দুই জন ছেলেমেয়ের পড়াশুনার খরচ, পরিবারের চিকিৎসার ৯০% খরচ ও বিনোদন ভাতা (মাসিক ৩০০ ডলার) পাবেন। যদিও দেশে আনতে ট্যাক্স দিতে হবে তথাপিও পোস্টিংয়ে থাকা অবস্থায় ট্যাক্স ফ্রি গাড়ী কিনতে পারবেন। দেশী বিদেশী অনেক ট্রেনিং পাবেন। ট্রেনিং করলে সম্মানী হিসেবে ভালো একটা টাকা পকেটে ভরতে পারবেন।
লোকবল কম বলে পদোন্নতির সুযোগ ভালো । প্রায় সবাই নাকি রাষ্ট্রদূত হয়। রাষ্ট্রদূতরা যেহেতু বিদেশে দেশের প্রতিনিধিত্ব করে তাই ভালোই সম্মান পাবেন। বিভিন্ন দেশের বড় বড় ব্যক্তিদের সাক্ষাত পাবেন। আর বিদেশ ভ্রমণ তো আপনার কাছে পান্তা ভাত।
মন্ত্রণালয়ে পদক্রমঃ সহকারী সচিব > সিনিয়র সহকারী সচিব > পরিচালক > মহাপরিচালক > অতিরিক্ত সচিব > সচিব।
দূতাবাসে পদক্রমঃ Third Secretary > Second Secretary > First Secretary > Councilor > Minister > Ambassador / High Commissioner.
===প্রশাসন ক্যাডার===
বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের চাকরি হলে আপনি মাঠ প্রশাসনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করবেন। এই ক্যাডারের প্রধান কাজ হলো অন্য সকল ক্যাডার অফিসারদের কাজের সমন্বয় করা। অবশ্য মোবাইল কোর্ট পরিচলনা করাও একটা কাজ। কাজের চাপ আছে মারাত্বক। ছুটি ছাটা কম।
ম্যাজিস্ট্রেট, এসি (ল্যান্ড), ইউএনও, ডিসি হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাবেন। যোগদানের দুই তিন বছর পরেই এসি (ল্যান্ড) হিসেবে পোস্টিং পাবেন। ইউএনও হিসেবে বাড়ী ও গাড়ীর সুবিধা পাবেন। যেহেতু সকল অফিসের সমন্বয় করাই কাজ, তাই উপজেলা ও জেলায় আপনাকে অনেকেই চিনবে।
সচিবালয়ে পোস্টিং হলে সরকারের পাঁচটি সচিবালয়ে (বাংলাদেশ সচিবালয়, পাবলিক সার্ভিস কমিশন সচিবালয়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, জাতীয় সংসদ সচিবালয়, মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়) সহকারী সচিব হিসেবে যোগদান করবেন। দেশের বাইরে বিভিন্ন দূতাবাসেও পদায়ন হতে পারে।
এই ক্যাডারের সবচেইয়ে বড় আকর্ষন হলো বৈচিত্রময়তা। অন্য ক্যাডাররা যেখানে নিজের কাজটা নিয়েই থাকবে, সেখানে চাকরিজীবনে আপনি অনেক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ পাবেন। মন্ত্রনালয়, সরকারের সকল অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, বোর্ড, ইন্সটিটিউট, কর্পোরেশনগুলোতে পোস্টিং পাবেন। অর্থাৎ জুতা সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ আপনার বিচরণক্ষেত্র।
দেশ ও বিদেশে অনেক ট্রেনিং ও স্কলারশীপ পাবেন। ফলে বিদেশ ভ্রমণ থেকে শুরু করে আর্থিকভাবেও লাভবান হতে পারবেন। লিয়েন ও প্রেষনে কাজ করার ভালো সুযোগ আছে এই ক্যাডারে। লিয়েন ও প্রেষণে থাকলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। বিভাগীয় ট্রেনিং হয় ঢাকার শাহবাগে।
সাধারণত আমলা বলতে আমরা অ্যাডমিন ক্যাডারকেই বুঝি। এই ক্যাডারে পদোন্নতি মোটামুটি। ছয় বছরে ইউএনও আর দশ বছরে উপসচিব হওয়ার আশা করতে পারেন। একদম কাছে থেকে সাধারণ জনগণের সেবা করার জন্য এই ক্যাডার সবচেয়ে ভালো।
মাঠ পর্যায়ে পদক্রমঃ সহকারী কমিশনার > সিনিয়র সহকারী সচিব/অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক > জেলা প্রশাসক > অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার > বিভাগীয় কমিশনার
সচিবালয়ে পদক্রমঃ সহকারী সচিব > সিনিয়র সহকারী সচিব > উপসচিব > যুগ্মসচিব > অতিরিক্ত সচিব > সচিব
===পুলিশ ক্যাডার===
বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে চাকরি হলে আপনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এএসপি (অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিনটেন্ডেট অফ পুলিশ) হিসেবে যোগদান করবেন। সেখান থেকে আপনাকে এক বছরের প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী, সারদা, রাজশাহীতে পাঠানো হবে। কঠোর প্রশিক্ষণ শেষে আপনাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুলিশ সাইন্সে মাস্টার্স ডিগ্রী প্রদান করা হবে।
এরপর আপনার পোস্টিং জেলা পুলিশে হবে। সেখানে এএসপি হিসেবে কাজ করবেন। আপনার পোস্টিং বিভিন্ন মেট্রোপলিটন পুলিশে হতে পারে। মেট্রোপলিটন পুলিশে হলে আপনি সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদান করবেন।
সিভিল সার্ভিসের ক্যাডারগুলোর মধ্যে একমাত্র পুলিশ ক্যাডারের সব অফিসারদেরই ইউএন মিশনে যাওয়া সম্ভব। মিশনে গেলে এক বছরে আপনি বিশ থেকে চল্লিশ লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন। দেশে থাকলে ঝুঁকি ভাতা পাবেন। রেশন পাবেন। পুলিশ হাসপাতালে সুচিকিৎসা পাবেন।
যোগদানের কিছুদিন পর থেকেই বাড়ী, গাড়ী, ড্রাইভার, বডিগার্ড ইত্যাদি বরাদ্দ পাবেন। তাছাড়া যেখানেই পোস্টিং হোক না কেন থাকা ও যাতাযাতের ব্যবস্থা সরকারীভাবে দেওয়া হবে। দেশে ও বিদেশে প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ আছে।
মূল ধারার পুলিশিং ভালো না লাগলে আপনি স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (SSF), র‍্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (RAB), ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ (DB), স্পেশাল ব্রাঞ্চ (SB), সিআইডি (Criminal Investigation Department), পিবিআই (Police Bureau of Investigation), সোয়াট (Special Weapond And Tactics), আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (APBn), এসপিবিএন (SPBn), রেলওয়ে পুলিশ, শিল্প পুলিশ, পর্যটন পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ইত্যাদিতে কাজ করতে পারবেন।
তবে এই ক্যাডারে নয়টা পাঁচটা ডিউটি বলে কিছু নাই। রাতে ঘুমাচ্ছেন হটাৎ শুনবেন অমুক জায়গায় অমুক ঘটনা ঘটেছে এখনই যেতে হবে। সমাজের অন্ধকার দিকের সাথে ভালোভাবে পরিচিত হবেন। সারাদিন খুন, ডাকাতি, হত্যা, ফাঁসি, লাশ, চোরাচালান ইত্যাদি নিয়েই থাকতে হতে পারে। ছুটি ছাটাও কম।
জেলায় পদক্রমঃ সহকারী পুলিশ সুপার > সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার > অতিরিক্ত পুলিশ সুপার > পুলিশ সুপার > অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক > উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক > অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক > মহাপুলিশ পরিদর্শক
মেট্রোপলিটানে পদক্রমঃ সহকারী পুলিশ কমিশনার > সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার > অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার > উপ পুলিশ কমিশনার > যুগ্ম পুলিশ কমিশনার > অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার > পুলিশ কমিশনার
===শুল্ক ও আবগারি ক্যাডার===
বিসিএস শুল্ক ও আবগারি ক্যাডারে চাকরি হলে আপনাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সহকারী কাস্টমস কমিশনার হিসেবে যোগদান করবেন। শুল্ক ও আবগারী বিভাগ সরকারের পক্ষ থেকে পরোক্ষ কর আহরণ করে। শুল্ক গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করার সুযোগ আছে। কাস্টম হাউজ, স্থল বন্দর, বন্ডে কাজ করতে পারবেন।
পদোন্নতি দ্রুত। চার বছরেই পাওয়া যায়। শুল্ক ফাকি ও চোরাচালান ধরতে পারলে ইনসেন্টিভের ব্যবস্থা আছে। গাড়ী সুবিধা পাবেন।
দেশে ব্যবসা বাণিজ্য যত বাড়বে এই ক্যাডারের কাজ তত বাড়বে। বিভাগীয় ট্রেনিং হয় চট্টগ্রামে। তবে এই ক্যাডারের সমস্যা হলো ঘন ঘন বদলি। এছাড়া পুলিশ ক্যাডারের মতো এই ক্যাডারেরও একটা ইমেজ সংকট আছে। এখানে চাকরি করলে অনেকেই মনে করে লোকটা ঘুষখোর।
পদক্রমঃ সহকারী কাস্টমস কমিশনার > উপ কাস্টমস কমিশনার > যুগ্ম কাস্টমস কমিশনার > অতিরিক্ত কাস্টমস কমিশনার > কাস্টমস কমিশনার > জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য
===নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডার===
বিসিএস নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারে চাকরি হলে আপনি মহাহিসাব নিরীক্ষক এর কার্যালয়ে সহকারী হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক হিসেবে যোগদান করেন । তবে পোস্টিং ভেদে ভিন্ন ভিন্ন নাম হতে পারে । তবে নাম যাই হোক কাজ প্রায় একই।
সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন / পেনশন / ট্রেনিং বিল / জ্বালানি বিল / ক্রয়সহ যেখানেই সরকারী অর্থ ব্যয়ের প্রশ্ন জড়িত সেখানেই এই ক্যাডারের কাজ। তাই প্রায় সব অফিসেই আপনাদের পদচারণা থাকবে। যেহেতু ভুল ধরা আপনার কাজ তাই সব অফিসেই সম্মান পাবেন। গাড়ী সুবিধাও আছে।
সকল মিনিষ্ট্রি ও বিভাগে প্রায় ৪৯ টি Chief Accounts Officer এর অফিস রয়েছে । প্রত্যেক অফিসে একজন CAO এর অধীনে A-CAO গণ কাজ করেন । এই ক্যাডারে ৯০% পোষ্টিং ঢাকায় হয়। বিদেশ ভ্রমন করার সুযোগ পাবেন ভালোই। পদোন্নতিও ভালো।
পদক্রমঃ সহকারী হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক > উপ-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক > অতিরিক্ত হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক > হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক > মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক
===কর ক্যাডার===
বিসিএস কর ক্যাডারে চাকরি হলে আপনাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সহকারী কর কমিশনার হিসেবে যোগদান করবেন। আয়কর বিভাগ সরকারের একমাত্র বিভাগ যা দেশের জন্য প্রত্যক্ষ রাজস্ব আহরণ করে। আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় কাজের চাপ বাড়ে। তাছাড়া অন্যসময় মোটামুটি কাজ থাকে।
সরকারী বেসরকারী কোন আয়ের বিষয়ে সিআইসি গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। উক্ত কার্যক্রমের মাধ্যমে আহরিত রাজস্বের জন্য ইনসেন্টিভ পেয়ে থাকেন। গাড়ী সুবিধা পাবেন। পদোন্নতি দ্রুত। ঢাকা ও বিভিন্ন জেলা পর্যায়ে পদায়ন হয়।
পদক্রমঃ সহকারী কর কমিশনার > উপ কর কমিশনার > যুগ্ম কর কমিশনার > অতিরিক্ত কর কমিশনার > কর কমিশনার > জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য
===আনসার ক্যাডার===
বিসিএস আনসার ক্যাডারে চাকরি হলে আপনি আনসার ও ভিডিপি অধিদপ্তরের অধীনে সহকারী জেলা এ্যাডজুটেন্ট হিসেবে যোগদান করবেন। পদায়ন হবে জেলা লেভেলে। এই জবের ঝামেলা কম। লজিস্টিক সুবিধা ভালোই।
পদোন্নতি ভালোই। অতিরিক্ত মহাপরিচালক পর্যন্ত হতে পারবেন। মহাপরিচালক পদে প্রতিরক্ষা বাহিনী (আর্মি, নেভী, এয়ারফোর্স) থেকে আসেন। বিভাগীয় ট্রেনিং হয় গাজীপুরে আনসার ও ভিডিপি একাডেমীতে।
পদক্রমঃ সহকারী জেলা এ্যাডজুটেন্ট > জেলা এ্যাডজুটেন্ট > উপ-পরিচালক > পরিচালক > উপ-মহাপরিচালক > অতিরিক্ত মহাপরিচালক > মহাপরিচালক
===তথ্য ক্যাডার===
বিসিএস তথ্য ক্যাডারে আপনার চাকরি হলে আপনি সহকারী পরিচালক বা সমমানের পদে যোগদান করবেন। গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের অধীনে তথ্য অফিসে জেলা তথ্য কর্মকর্তা অফিসের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন। অফিসের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সরকারের গৃহীত নীতিমালা ও উন্নয়ন কর্মসূচির সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সভা, সেমিনার, আলোচনা সভা, সংগীতানুষ্ঠান ও সিনেমা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন।
সহকারী পরিচালক (অনুষ্ঠান) পদে যোগদান করলে টিভিতে ও বেতারে অনুষ্ঠান প্রচারের সকল দায়িত্বে থাকবেন। বাংলাদেশ বেতারে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করলে বেতারের প্রকৌশল বিভাগে কাজ করবেন। বাংলাদেশ বেতারে বার্তা বিভাগে সহকারী বার্তা নিয়ন্ত্রক পদে যোগদান করলে সংবাদ প্রচারসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজ করবেন।
তথ্য ক্যাডাররা তথ্য অধিদপ্তর, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ বেতার, জাতীয় গণমাধ্যম ইন্সটিটিউট ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে মাননীয় মন্ত্রীগণের Public Relations officer (PRO), বিদেশে কয়েকটি দূতাবাসে তথ্য কর্মকর্তা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির অফিসে তথ্য কর্মকর্তা হতে পারেন। এছাড়া প্রেষণে বাংলাদেশ টেলিভিশনেও কাজ করার সুযোগ আছে।
প্রমোশন মোটামুটি। কাজের চাপ কম। ছুটি পাবেন। বিভাগীয় প্রশিক্ষণ হয় জাতীয় গণমাধ্যম ইন্সটিটিউট, ঢাকা।
পদক্রমঃ সহকারী পরিচালক/জেলা তথ্য অফিসার/গবেষণা কর্মকর্তা > উপপরিচালক > পরিচালক > অতিরিক্ত মহাপরিচালক / অতিরিক্ত প্রধান তথ্য কর্মকর্তা > মহাপরিচালক / প্রধান তথ্য কর্মকর্তা
বার্তা বিভাগের পদক্রমঃ সহকারী বার্তা নিয়ন্ত্রক > উপ বার্তা নিয়ন্ত্রক > আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক > বার্তা নিয়ন্ত্রক > প্রধান উপ-মহাপরিচালক (বার্তা)
প্রকৌশল বিভাগের পদক্রমঃ সহকারী বেতার প্রকৌশলী > উপ-আঞ্চলিক প্রকৌশলী > আঞ্চলিক প্রকৌশলী > সিনিয়র প্রকৌশলী > অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী > প্রধান প্রকৌশলী পরিচালক
বেতারের পদক্রমঃ সহকারী পরিচালক > উপপরিচালক > উপআঞ্চলিক পরিচালক > আঞ্চলিক পরিচালক > পরিচালক > উপ-মহাপরিচালক > মহাপরিচালক
===খাদ্য ক্যাডার====
বিসিএস খাদ্য ক্যাডারে নির্বাচিত হলে আপনাকে সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করতে হবে৷ সেখান থেকে আপনাকে খাদ্য অধিদপ্তরে ন্যস্ত করা হবে। খাদ্য অধিদপ্তর থেকে যেকোন জেলায় পোস্টিং দেবে।
সাধারণ জনগণের কাছে থেকে ধান, চাল, গম ইত্যাদি খাদ্য সংগ্রহ করে কৃষকের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাজার স্থিতিশীল রাখা এবং বিদেশ থেকে নানা ধরণের খাদ্য আমদানি করা, ওএমএস, ভিজিএফ, ভিজিডি, কাবিখা, টিআর, ভিআর খাতে খাদ্যশস্য বিতরণ করাই এই ক্যাডারের কাজ।
যোগদানের পর যাতায়াতের জন্য মাইক্রোবাস সার্ভিস পাবেন। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হলে গাড়ী পাবেন। পদোন্নতি মোটামুটি। কাজের চাপ কম। ফলে ছুটি পাবেন।
পদক্রমঃ সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক > জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক > আঞ্চলিক পরিচালক > অতিরিক্ত পরিচালক > পরিচালক > মহাপরিচালক
===বাণিজ্য ক্যাডার===
বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারে নিয়োগ হলে আপনাকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সহকারী নিয়ন্ত্রক হিসেবে যোগদান করতে হবে। পোস্টিং মন্ত্রণালয়ে অথবা যেকোন বিভাগীয় শহরে হয়।
বিদেশ ভ্রমনের সুযোগ আছে৷ দুতাবাসেও পোস্টিং পাওয়া যায়। প্রমোশন যথাসময়ে হয়। যাওয়া আসার জন্য গাড়ী সার্ভিসের ব্যবস্থা আছে। কাজের চাপ কম। ছুটি পাবেন।
পদক্রমঃ সহকারী নিয়ন্ত্রক > উপ-নিয়ন্ত্রক > যুগ্ম-নিয়ন্ত্রক > নিয়ন্ত্রক > উপ-প্রধান নিয়ন্ত্রক > প্রধান নিয়ন্ত্রক
===ডাক ক্যাডার===
বিসিএস ডাক ক্যাডারে নিয়োগ হলে আপনি বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল বা পোস্ট মাস্টার জেনারেলের কার্যালয়ে সহকারী পোস্ট মাস্টার জেনারেল হিসেবে যোগদান করবেন। ডাক বিভাগের প্রশাসনিক নথিপত্র প্রস্তুত, যাচাই-বাছাই, দরপত্র প্রস্তুত, বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করাই এই পদের কাজ।
কাজের চাপ কম। ছুটি পাবেন। রাজশাহীতে পোস্টাল একাডেমীতে বিসিএস ক্যাডারদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পদোন্নতিতে ধীরগতি।
পদক্রমঃ সহকারী পোস্টমাস্টার জেনারেল > ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল > অতিরিক্ত পোস্টমাস্টার জেনারেল > পোস্টমাস্টার জেনারেল > অতিরিক্ত মহাপরিচালক > মহাপরিচালক
===সমবায় ক্যাডার===
বিসিএস সমবায় ক্যাডারে নির্বাচিত হলে আপনি সহকারী নিবন্ধক হিসেবে যোগদান করবেন। পদায়ন হবে জেলা অফিসে। তবে জেলা, বিভাগীয় ও সদরদপ্তরের পাশাপাশি বাংলাদেশ সমবায় একাডেমী ও আঞ্চলিক সমবায় ইন্সটিটিউটে কাজ করার সুযোগ আছে।
বিভিন্ন সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রদান, বার্ষিক অডিট সম্পাদন, বিভিন্ন সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পে ঋণদান, সমবায় অধিদপ্তরকে শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতায় সমবায়ীগণের মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা, সমবায় সমিতিতে সমবায় বাজার স্থাপনসহ অন্যান্য বিভাগীয় কার্যক্রম পরিচালনা ও তদারকি করাই কাজ।
পদোন্নতি মোটামুটি। কাজের চাপ কম। ছুটি পাবেন। বিভাগীয় ট্রেনিং হয় ঢাকায়।
পদক্রমঃ সহকারী নিবন্ধক > উপ-নিবন্ধক > যুগ্ম-নিবন্ধক > অতিরিক্ত নিবন্ধক > নিবন্ধক

===পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডার===
বিসিএস সমবায় ক্যাডারে নির্বাচিত হলে আপনি পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে যোগদান করবেন। সেখান থেকে আপনাকে দেশের যেকোন উপজেলা বা জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে পদায়ন করা হবে।
গ্রাম পর্যায় থেকে শুরু করে বিভাগীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে পরিবার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকেন এই ক্যাডারের কর্মকর্তারা। পদোন্নতিতে ধীরগতি। কাজের চাপ কম। ছুটি পাবেন।
পদক্রমঃ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা > সহকারী পরিচালক > উপপরিচালক > পরিচালক > মহাপরিচালক


===রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক ক্যাডার===
বিসিএস রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক ক্যাডারে নিয়োগ হলে আপনি সহকারী ট্রাফিক সুপারিন্টেনডেন্ট পদে যোগদান করবেন। রেল পরিদর্শন অধিদপ্তরের পাশাপাশি রেলওয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, রেলপথ মন্ত্রণালয়সহ প্রেষণে অন্য অনেক উচ্চপদে কাজের সুযোগ পাবেন।
যোগদানের পর যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের নিমিত্তে রেলের চলাচল তদারকি করবেন এবং রেলওয়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন। পদোন্নতিতে ধীরগতি। কাজের প্রেসার কম। ছুটি পাবেন। চট্রগ্রামের রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমীতে সাড়ে চার মাসের বিভাগীয় প্রশিক্ষণ পাবেন।
পদক্রমঃ সহকারী ট্রাফিক সুপারিন্টেনডেন্ট > সিনিয়র সহকারী ট্রাফিক সুপারিন্টেনডেন্ট > ট্রাফিক সুপারিন্টেনডেন্ট > অতিরিক্ত মহাপরিচালক > মহাপরিচালক
আপনাদের সাড়া পেলে দ্বিতীয় পর্বে টেকনিক্যাল ক্যাডারসমূহের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে লিখব।



Related Tag:

bcs preparation,bcs preparation bangla,bcs,bcs preliminary preparation,bcs preparation general knowledge,bcs exam preparation,bcs preparation english,bank job preparation,40th bcs preparation,bcs preparation tips,bcs preparation math,41th bcs preparation,bcs tips,bcs english preparation,bcs preparation tutorial,preparation,bcs preliminary,job preparation,bcs general knowledge,38th bcs preparation,bcs math preparation
জেনারেল ক্যাডারসমূহের সুবিধা অসুবিধা BCS PREPARATION | BCS CADRE CHOICE জেনারেল ক্যাডারসমূহের সুবিধা অসুবিধা BCS PREPARATION | BCS CADRE CHOICE Reviewed by studynotebd on November 29, 2019 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.